সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রতি সপ্তাহে চাল আমদানি হচ্ছে। সরকার আরও পঞ্চাশ হাজার মে.টন চাল কেনার প্রস্তুতি নিয়েছে। নওয়াপাড়া ও খুলনার বেসরকারি গুদামগুলোতে মজুদ অনেক বেশি। সরকারি গুদামে ঠাঁই নেই। আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বোরো চাল বাজারে উঠতে শুরু করবে। এত আমদানির পরও খুলনা চালের বাজার অস্থির। সর্বনিম্ন প্রতিকেজির মূল্য ৫১ টাকা, সর্বোচ্চ ৯৮ টাকা।
জেলা খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে ৫৫ হাজার মে.টন ননবাসমতি চাল আসে। মায়ানমার থেকেও কিছু সিদ্ধ চাল আসবে। মার্চ মাসের গতকাল পর্যন্ত ৪২ হাজার মে.টন চাল নিয়ে নয়টি জাহাজ মোংলা বন্দরে ভেড়ে। আর্জেন্টিনা থেকে ১৯ হাজার সাতশ মে.টন গমও আসে। এছাড়া চলতি অর্থ বছরের বছরের জুলাই থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, যশোরের বেনাপোল এবং সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে ৮৮ হাজার মে.টন চাল আসে। এ অঞ্চলের আমদানিকারকরা হচ্ছে খুলনার বটিয়াঘাটার আর এল ইন্টারন্যাশনাল, খুলনা নগরীর কে এন ট্রেডার্স, পলি এন্টারপ্রাইজ, বাগেরহাটের ফকিরহাটের জয় ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সাতক্ষীরার কলারোয়ার পলাশ এন্টারপ্রাইজ, মুকুল এন্টারপ্রাইজ, যশোরের ঝিরকগাছার ইসমাইল হোসেন মিরন, নাভারনের ইসলামপুর রাইস মিল, অভয়নগরের জাহাঙ্গীর হোসেন, শার্শার সর্দার এ্যালুমিনিয়াম স্টোর, নাভারণের মৌসুমী ট্রেডার্স, ঝিকরগাছার ইমু, রেজাউল এন্ড সন্স, বাগআঁচড়ার আব্দুল খালেক ও যশোর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের রুশ এন্টারন্যাশনাল।
খুলনা বিভাগের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক (খাদ্য) মশিউর রহমান জানান, চালের কোন ঘাটতি নেই। সরকার এমাসে আরও ৫০ হাজার মে.টন চাল কিনছে। দক্ষিণ জনপদের মানুষের কাছে আতপ চালের চাহিদা না থাকায় পাকিস্তানী চাল মোংলা বন্দরে আসছে না। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে যথেষ্ট মজুদ। দাম বাড়ার কোন কারণ নেই।
খুলনার বড়বাজারের ব্যবসায়ী পিকে ট্রেডার্সের মালিক জানান, স্থানীয় বাজারে ভারতীয় চালের চাহিদা বেড়েছে। খুলনা অঞ্চলের রাইস মিলগুলোতে ধানের সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী চাল পাওয়া যাচ্ছে না। মিনিকেট প্রতিকেজি চাল ৬১ টাকার পরিবর্তে ৬৪ টাকা, বাসকাটি ৬৬ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, নাজিরশাইল ৫৮ টাকার পরিবর্তে ৬১ টাকা, বালাম ৫১ টাকার পরিবর্তে ৬৩ টাকা। শাহজাহান ভান্ডারের ম্যানেজার গৌতম বিশ্বাস জানান, মোটা হিরা ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা ও রত্না বালাম ৫৮ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, ভারতীয় মহামায়া, আরএস গোল্ড ও রত্না আয়াজ ৩৬ জাতের চাহিদা বেশি।
খুলনার সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তৈয়েবুর রহমান জানান, খুলনার দুটি কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামে ৪৭ হাজার টন চাল মজুদ রয়েছে।
বাংলাদেশ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি, কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান বলেন, স্থানীয় হাটগুলোতে মিনিকেট ধান নেই সে কারণেই রাইস মিলগুলো যথারীতি চাল দিতে পারছে না। স্থানীয় কৃষক জানান প্রতি মন ধান এখন আঠারশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, বোরো মৌসুমের শুরুতে মূল্য ছিল এগারোশ’ টাকা।
খুলনা গেজেট/এমএম